“খাওয়ার আদব” বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা:
মাটিতে বসে থাওয়ার সুন্নত হওয়ার জন্য একটি শর্ত মাটিতে বসে খাওয়া সুন্নতের অধিকতর নিকটবর্তী এবং অধিক সওয়াব লাভের উপায় ও সর্বোত্তম । এটা তখন, যখন এর প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করা না হয় । অথাৎ একে নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ বা হাসি ঠাট্টা করা না হয় । সুতরাং যদি কোথাও এমন আশংকা দেখা দেয় যে, নীচে বসে খেলে লোকেরা তা নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করবে, তখন বসে খাওয়ার ব্যাপারে পীড়াপীড়ি করাও দুরস্ত হবে না ।
আব্বাজান একবার ছবক পড়াবার সময় আমাদেরকে তার একটি ঘটনা এভাবে শুনিয়েছেন যে, একবার আমি ও আমার কতিপয় সঙ্গী-সাথী দেওবন্দ থেকে দিল্লি গিয়েছিলাম । দিল্লি পৌঁছলে খানা খাওয়ার প্রয়োজন দেখা দেয় । যেহেতু খাওয়ার আর কোন ব্যবস্থা ছিল না, তাই আমরা সবাই একটা হোটেলে ঢুকে পড়লাম ।
এ তো সবারই জানা যে, হোটেলে চেয়ার-টেবিলে খাওয়ার ব্যবস্থা হয় । এই কারণে আমাদের দু’জন সাথী বললেন, আমরা চেয়ার-টেবিলে বসে খাব না । কেননা, মাটিতে বসে খাওয়া সুন্নত । যাই হোক, তারা হোটেলের ভেতরেই মাটিতে রুমাল বিছিয়ে বয়দের মাধ্যমে খানা এনে খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করল । আব্বাজান (রহঃ) বলেন, আমি তাদের নিষেধ করলাম; কিন্তু তারা বলল, চেয়ার-টেবিলে বসে আমরা কেন খাব, যেখানে মাটিতে বসে খাওয়া সুন্নতের অধিকতর নিকটবর্তী । সুতরাং ভয়ই বা কিসের, লজ্জাই বা কেন করব ।
আব্বাজান বলেন, লজ্জা বা ভয়ের বিষয় নয়; বরং আসল কথা হলো, যখন তোমরা এভাবে নিজেদের রুমাল বিছিয়ে বসবে, তখন মানুষের সামনে এই সুন্নতকে মজাকের বস্তুতে পরিণত করবে; এভাবে মানুষ এই সুন্নতের প্রতি অবজ্ঞা করার দায়ে পড়বে । আর সুন্নতের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন শুধু গোনাহই নয়; বরং কোন কোন সময়ে তা মানুষকে কুফর পর্যন্ত পৌঁছে দেয় । আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে রক্ষা করুন।